Thursday, 25 June 2015

সেন্টমার্টিনের ভয়ংকর সেই মৃত্যুফাঁদ..... সকলে সচেতন হোন.....


সেন্টমার্টিন নেমে প্রথম বীচে হাটা শুরু করলে কয়েক মিনিট পরেই অর্থাৎ অনেক কাছেই এই মৃত্যুফাঁদ। ওখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে হতে কিছু বুঝে উঠার আগেই হয়ত ভুলবশত আপনিও পা দিতে পারেন এই জায়গাটিতে !!! কারন নীল পানির আচ্ছাদনে আলাদা করে বোঝার কোণ উপায়ই নেই।
প্রথমে জাহাজে করে সবাইকে সেন্টমার্টিন ফেরীলাইনে নামিয়ে দেয়া হয়। আর সেখান থেকে পায়ে হেটে ব্রীজটা পার হয়ে এসে নামতে হয় সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এখানে নামলেই হাতের ডানদিকে যে বীচটা দেখতে পাই এটিই সেই বীচ, প্রায় বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা সবাই এই বীচ ধরে হাটি এবং ব্রীজের গোড়ার দিক থেকে পানিতে নামি আর কিনারা ঘেষে ডান দিকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি।।
পানিতে একবার নেমে পড়লে আমরা আর কেউই কিন্তু বালিতে উঠে আসিনা সামনে এগুতে থাকি পানি ধরেই। ঠিক সোজা সামনের দিকে এগিয়ে গেলে এবার দ্বীপটা হাতের বা দিকে টার্ন নেয়। ঐ জায়গাকে বলা হয় “জিনজিরা উত্তরপাড়া” স্থানীয়রা বলেন উত্তর বীচ।
সেন্টমার্টিন এর চারদিক ঘিরে ১.৫ কিলমিটার পর্যন্ত রয়েছে মুল্যবান কোরাল। কোরাল আহরন বেআইনী হলেও সেই জায়গাটিতে চলছে অবাধ কোরাল আহরন। যার কারনে অনেক জায়গা জুড়ে বড়-সড় গর্ত তৈরী হয়েছে। সেন্টমার্টিনের ইকোকে নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা জানিনা এবং কোন নির্দেশনা নেই বলেই ঐ বীচে নেমে আমরা সাতার কাটতে কাটতে এই টার্ন দিয়েই বা পাশের বীচের দিকে এগুতে থাকি, আর তখনি কিছু বুঝে উঠার আগেই সমুদ্রের অতলে হারিয়ে যায় অনেকেই|
ছবিটি দেখলে আশা করি জায়গাটি চিনতে পারবেন.....
সবার কাছে অনুরোধ রইলো এই স্থানটা সম্পর্কে আপনার কাছের সবাইকে শেয়ার করে সচেতন করে দিন।

মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনও প্রাণীর মধ্যে বিয়ের কোনও রীতি নেই,-তসলিমা নাসরিন

মানুষ বিয়ে করে কেন? নির্বিঘ্নে যৌন সম্পর্ক করা, সন্তান জন্ম দেওয়া-–এর জন্য বিয়ের তো দরকার নেই! মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনও প্রাণীর মধ্যে বিয়ের কোনও রীতি নেই, অথচ দিব্যি তারা একত্রবাস করছে, সন্তান জন্ম দিচ্ছে, সন্তানকে খেটে খুটে বড় করছে। পরস্পরেরর প্রতি বিশ্বস্ত থাকার জন্যও বিয়েটা জরুরি নয়। অনেক প্রাণী আছে যারা যৌবনের শুরুতে যে সঙ্গী বেছে নেয়, সেই সঙ্গী নিয়েই দিব্যি সুখে শান্তিতে বাকি জীবন কাটিয়ে দেয়। অন্য কারও জন্য লোভ করে না, কাউকে নিয়ে আবার নতুন সংসার পাতার কোনও স্বপ্ন আর দেখে না। অবিশ্বাস্যরকম বিশ্বস্ত, একগামী। যত দূরেই যাক, যত সমুদ্রই পেরোক, যত বয়সই বাড়ুক, ঘরে ফিরে পুরোনো সেই সঙ্গীকেই চুমু খায়, তার বুকেই মাথাটা রাখে। পরকীয়া কাকে বলে, বহুগামিতা কাকে বলে, বিশ্বাসঘাতকতা কাকে বলে জানেই না। অ্যালবাট্রোস, রাজহাঁস, কালো শকুন, ন্যাড়া ঈগল, টার্টল পায়রা, ডিক-ডিক হরিণ, বনেটমাথা হাঙ্গর, গিবন, ফ্রেঞ্চ এঞ্জেলফিস, ছাইরঙা নেকড়ে, প্রেইরি ভোল--এদের কথা বলছি। মানুষ তো বিয়ে করে একসঙ্গে সুখে শান্তিতে সারা জীবন কাটানোর জন্য কিন্তু ক’জন পারে, শুনি? বেশির ভাগের বিয়েই হয় ভেঙে যায়, অথবা টিকে থাকলেও ভালোবাসাহীন টিকে থাকে। টিকিয়ে রাখতে হয় সন্তানের অসুবিধে হবে বা অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে, বা লোকে কী বলবে ভয়ে। এভাবে টিকে থাকাকে ঠিক টিকে থাকা বলে না। ঘরে স্ত্রী রেখে বা স্বামী রেখে দিব্যি অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক গড়ছে মানুষ। সেই সম্পর্কও ভেঙে যায়, আবার নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মানুষ ন্যাড়া ঈগল নয়, বা কালো শকুন নয়। একগামিতা মানুষের চরিত্রে নেই। মানুষ বহুগামী। মানুষ বহুগামী, এও কিন্তু হলফ করে বলা যায় না। মানুষ আসলে জটিল এবং বিচিত্র। একগামী, বহুগামী, অসমকামী, সমকামী, উভকামী-- মানুষ অনেক কিছুই। নতুন কিছুতে অভ্যস্ত হতে, পুরোনো স্বভাব পাল্টাতেও মানুষের জুড়ি নেই। প্রায় সব ধর্মই বিয়েকে পুরুষ আর নারীর ‘পবিত্র মিলন’ বলে ঘোষণা করেছে। ঈশ্বরই নাকি আগে থেকে সঙ্গী নির্বাচন করে রাখেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আর যা কিছু ঘটুক, বিচ্ছেদ যেন না ঘটে, ঈশ্বর সতর্ক করে দিয়েছেন। তাতে কী! প্রচণ্ড ঈশ্বর ভক্তরাও ঈশ্বরের এই উপদেশ আজকাল আর মানেন না। ঈশ্বরের নির্বাচিত সঙ্গীকে দিব্যি তালাক দিয়ে নিজে সঙ্গী নির্বাচন করেন। ‘ম্যাচমেকার’ হিসেবে ঈশ্বর পুরো মার খেয়ে গেছেন, এ খবর কে না জানে! প্রায় সব ধর্মই বিয়েতে নাক গলিয়েছে। বয়স, লিঙ্গ, জাত, বিশ্বাস কী হওয়া চাই, স্বামী-স্ত্রীর কর্তব্য এবং দায়িত্বই বা কী হওয়া উচিত--এ নিয়ে বিস্তর উপদেশ দিয়েছে, কঠোর কঠোর নিয়মও তৈরি করেছে। বিয়ে যদিও ব্যক্তিগত ব্যাপার, কিন্তু ধরে বেঁধে একে সামাজিক করে ফেলা হয়েছে। পুরুষদের না করা হলেও মেয়েদের করা হয়েছে সামাজিক সম্পত্তি। বিয়ের আগে মেয়েটা কারও সঙ্গে প্রেম করেছে কি না, ঠিকঠাক কুমারী ছিল কি না, বিয়ের পর স্বামী ছাড়া আর কারও সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে কি না, কার সঙ্গে বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছে, কখন ফিরছে, বাইরের কোনও পুরুষলোক বাড়িতে ঢুকেছে কি না, এসব শুধু বাড়ির নয়, বাড়ির বাইরের লোকও লক্ষ রাখছে। সমাজের দশটা লোক দেখছে বলেই পান থেকে চুন খসলে মেয়েদের নিয়ে সমাজে মুখ দেখাতে পারে না বাবারা, ভাইয়েরা, কাকারা। মেয়েদের খুন করে পরিবারেরর ‘সম্মান’ রক্ষা করে। সভ্য শিক্ষিত বিশ্ব থেকে বিয়ে প্রায় উঠে যাচ্ছে। কিছু লোক অবশ্য করছে বিয়ে! এভারেস্টটা আছে বলে যেমন অনেকে এভারেস্টে চড়ে, বিয়েটা আছে বলেই অনেকে বিয়েটা করে। বিয়ের চল চলে গেলে আর করবে না। যে প্রথা চলছে, অধিকাংশ লোক সেই প্রথাকেই চালিয়ে নিয়ে যায়। আর, যার প্রচলন নেই, তাকে চালু করতে খুব অল্প ক’জনই উদ্যোগ নেয়। অনেক প্রেমিক-প্রেমিকা বিয়ে না করেও দিব্যি সংসার করছে বছরের পর বছর। বিয়ে না করেই সন্তান জন্ম দিচ্ছে। বিয়ের পিতৃতান্ত্রিক চরিত্র নিয়ে বিস্তর হাসাঠাট্টা করছে। কিন্তু ধর্ম যেমন মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ার পরও টিকে আছে, বিয়েটাও ওই ধর্মের মতোই। যুক্তিহীন, কিন্তু টিকে আছে। কুসংস্কার যেমন হাজার বছর ধরে বেঁচে থাকে! তবে ওরা ধীরে ধীরে বিলুপ্তও হয়ে যায় বটে। বিয়েরও বিলুপ্তি ঘটবে। উত্তর- ইওরোপের দেশগুলোয় বিয়ে করার পেছনে গোপন একটি কারণও অবশ্য আছে, বিয়ে করলে ট্যাক্স কম দিতে হয়, সন্তানাদি পোষার খরচ সব রাষ্ট্রই দেয়। মানুষ বিয়ে করছে না, বাচ্চাকাচ্চাতেও খুব একটা কারওর উৎসাহ নেই, বিয়ের প্রথাটি ভেঙে গেলে সন্তান উৎপাদন যে হারে কমছে, সেটি আরও কমে যাবে, উত্তর-ইওরোপীয়দের অস্বিস্ত্বই ভবিষ্যতে থাকবে না, এই ভয়ে বিয়েতে উৎসাহ দিতে জনগণের নাকের ডগায় ট্যাক্স কমানোর মুলো ঝুলিয়েছে সরকার। সুযোগ সুবিধের আশায় বিয়ে করছে বটে কিছু লোক, তবে বেশির ভাগ লোকই হয় একা থাকে, নয়তো বিনে-বিয়ে’য় একত্রবাস করে। ষাট দশকের শেষ দিকে সমাজের বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ বেরিয়ে এসেছিল পুরোনো রাজনীতি আর পুরোনো সমাজব্যবস্থা আমূল পাল্টে ফেলতে। ভালো মেয়ে হতে হলে কৌমার্য, সতীত্ব, মাতৃত্ব ইত্যাদি বজায় রাখতে হয় -- পুরোনো এই ধারণাটির গায়েও কুড়োল বসিয়েছিল। রীতিমত বিয়ে করাই বন্ধ করে দিয়েছিল সেদিনকার হিপিরা। অনেকে একবাড়িতে বাস করতো, সবার সঙ্গে সবারই সেক্স হত, বাচ্চাকাচ্চা হলে সবাই মিলে দেখাশোনা করতো। সেই ‘কমিউন’ জীবন বেশি বছর টেকেনি। হিপিরা জয়ী হলে আজ বিয়েটা ইতিহাসের পাতায় স্থান পেতো, সমাজে নয়। অনেক কবি সাহিত্যিক দার্শনিক বিয়ে সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, বিয়েটা যে অনর্থক একটা জিনিস, তা বেশ কায়দা করে বুঝিয়েও দিয়েছেন। ‘নিজের বিয়েয় আর অন্তেষ্টিক্রিয়ায় পার্থক্য একটাই, বিয়ের ফুলগুলোর গন্ধ পেতে পারো, আর অন্তেষ্টির ফুলগুলোর পারো না’। অস্কার ওয়াল্ড বলতেন, ‘সবসময় প্রেম ভালোবাসায় ডুবে থাকা উচিত। সে কারণেই কখনও বিয়ে করা উচিত নয়’। ক্যাথারিন হেপবার্ন সে আমলেও নারী পুরুষের এক বাড়িতে বাস করার পক্ষে ছিলেন না। বলেছিলেন, ‘একটা নারী আর একটা পুরুষ পরষ্পরের সব কিছু পছন্দ করছে? যদি এরকম ঘটনা ঘটেই থাকে, তবে সবচেয়ে ভালো হয় তারা যদি একই পাড়ায় থাকে, মাঝে মাঝেই দেখা হবে!’ এও বলেছিলেন, ‘একটা লোক অপছন্দ করবে বলে যদি অনেক পুরুষের প্রেমকে তুচ্ছ করতে চাও ,তা হলে যাও, গিয়ে বিয়ে করো’। সুন্দর কিছু মন্তব্য করেছেন ক’জন ব্যাক্তিত্ব। ‘বিয়েটা চমৎকার আবিস্কার, ঠিক যেমন সাইকেল মেরামত করার যন্ত্রটাও চমৎকার আবিস্কার’। ‘বিয়েটা একটা খাঁচা, খাঁচার বাইরের লোকেরা খাঁচায় ঢোকার জন্য ব্যাকুল, আর খাঁচার ভেতরের লোকেরা খাঁচা থেকে বেরোবার জন্য ব্যাকুল’। ‘বিয়েটা শুধু তাদের জন্য ভালো, যারা একা ঘুমোতে ভয় পায়’। সব মন্তব্যই বিয়ের বিপক্ষে নয়। পক্ষেও কিছু মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। যেমন, ‘যদি এমন কোনও ধনকুবের পুরুষের দেখা পাই, যে প্রতিজ্ঞা করবে তার সহায় সম্পত্তির অর্ধেকটা আমায় লিখে দেবে, লিখে দিয়ে এক বছরের মধ্যে মরে যাবে, তবে তাকে আমি নিশ্চয়ই বিয়ে করবো’। অন্য আরও ক’জন বলেছেন, ‘বিয়েটা চমৎকার ইনস্টিটিউশন। কিন্তু কে চায় ইনস্টিটিউশনে বাস করতে?’ ‘প্রেমিকের স্নায়ুতন্ত্র পুরোটা উপড়ে তুলে নিলে যেটা পড়ে থাকে, সেটা স্বামী’। ‘বিয়েটা ঘুষ, যেন বাড়ির চাকরানী নিজেকে বাড়ির মালিক বলে মনে করতে পারে’। ফরাসি লেখক বালজাক বলেছিলেন, ‘বেশির ভাগ স্বামীকে দেখলেই আমার সেই ওরাংওটাংটির কথা মনে পড়ে, যে খুব বেহালা বাজানোর চেষ্টা করছিল’। পাশ্চাত্যে যখন হিপি বিপ্লব, নারী স্বাধীনতার আন্দোলন, প্রাচ্যে তখনও মেয়েদের হাতেপায়ে অদৃশ্য শেকল, যৌনাঙ্গে অদৃশ্য সতীত্ববন্ধনী। বিয়েটা যে কারণে শুরু হয়েছিল, প্রাচ্যের বেশির ভাগ পুরুষ এখনও সেই কারণেই বিয়ে করে। একটা জরায়ু দরকার, যে জরায়ু একটা নির্দিষ্ট পুরুষের ঔরসজাত সন্তান ধারণ করবে। পিতৃত্বের নিশ্চয়তাই বিয়ের মূল উদ্দেশ্য। পুরুষের স্বার্থে পুরুষকে বিয়ে করে পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থা হাজার বছর ধরে টিকিয়ে রাখছে মেয়েরা। মেয়েরা বেঁকে বসলে পুরুষতন্ত্রের বিরাট বেলুনটি সশব্দে চুপসে যেত কবেই! বাঙালি সমাজে দেখেছি, বিয়ের পর মেয়েদের ডানাটা গোড়া থেকে কেটে দেওয়া হয়। নিজের ঘরদোর-আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধব-পরিবেশপ্রতিবেশ-শহরবন্দর সব ছাড়তে হয় মেয়েদের। নিজের নামের শেষে স্বামীর পদবী জুড়তে হয়। শ্বশুর বাড়িতে বাস করতে হয়। মেয়ে প্রাপ্ত-বয়স্ক হলেও, শিক্ষিত হলেও, সে চাকরি করবে কি করবে না সেই সিদ্ধান্ত স্বামী এবং স্বামীর আত্মীয় স্বজন নেয়। একসময় তো প্রচলিত ছিলই, এখনও অনেকে বলে, যে, ‘বিয়ের পর চাকরি করা চলবে না’। সতী-সাবিত্রী থাকার জন্য ঘরে থাকাটা ভালো, ঘরের কাজকর্ম করবে, বাড়ির সবার সেবা করবে, সন্তান বড় করবে! গ্লোরিয়া স্টাইনেম একটা চমৎকার কথা বলেছিলেন, ‘সে-ই স্বাধীন মেয়ে, যে বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক করে, আর বিয়ের পরে, চাকরি’। অধিকাংশ বাঙালি মেয়ে স্বাধীনতার সঠিক অর্থই জানে না। কলকাতায় স্বামী-স্ত্রীর প্রেমহীন সম্পর্ক দেখে আঁতকে উঠতাম মাঝে মাঝে। প্রায়ই জিজ্ঞেস করতাম, ‘বিয়েটা ভেঙে যেতে চাইলে ভেঙে যেতে দাও, জোর করে দাঁড় করিয়ে রাখছো কেন?’ ভালো কোনও উত্তর কখনও পেতাম না। অসুখী জীবনে বহুদিন থাকতে থাকতে মেয়েরা অভ্যস্তও হয়ে যায়। যে সন্তানের জন্য বিয়ে না ভাঙা, সেই সন্তান সংসারের অশান্তি দেখতে দেখতে বড় হয়। এমন সংসারে সন্তানের গড়ে ওঠায় লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। আসলে, মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা আর নিরাপত্তা সমাজে না থাকলে একা বাস করা বা একা সন্তান মানুষ করা দুরূহ। কিন্তু তাই বলে কি অত্যাচারী স্বামীর সঙ্গে আপোস করতে হবে! বধু নির্যাতন আর বধু হত্যা যে হারে বাড়ছে, তা দেখে গা শিউরে ওঠে। পুরুষতন্ত্রের বীভৎস নারীবিদ্বেষ আর নারীঘৃণা কী উৎকটভাবেই না প্রকাশ পায়! যে সমাজে শিক্ষিত, স্বনির্ভর, সচেতন মেয়ের সংখ্যা বেশি, সেই সমাজে বিচ্ছেদের সংখ্যাটা বেশি, বিয়ের সংখ্যাটা কম। ভারতীয় উপমহাদেশে অবশ্য উপার্জনহীন পরনির্ভর মেয়েদের মতো পুরুষতন্ত্রের মন্ত্র মেনে চলা স্বনির্ভর শিক্ষিত মেয়েরাও অত্যাচারী বা বহুগামী স্বামীর সঙ্গে সংসার করছে মুখ বুজে। এধরণের সমাজে, বিয়েটা নিতান্তই পুরুষের ক্ষেত্রে অর্জন, মেয়েদের ক্ষেত্রে বিসর্জন। বিয়ে কাউকে একাকীত্ব থেকে মুক্তি দেয়, কারও পায়ে পরায় নির্মম শেকল। এখনও সমাজে দেদার বর্বরতা চলে, চলে জাত বর্ণের হিসেব, পণের হিসেব, স্ত্রীকে নিতান্তই যৌনসামগ্রী, ক্রীতদাসী আর সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা, সন্তান বিশেষ করে পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার চাপ, কন্যাভ্রুণকে জন্মাতে না দেওয়া, জন্মালেও পুঁতে ফেলা, পুত্র না জন্মালে তালাক, পুনর্বিবাহ। নিয়ম মেনে চলার লোক যেমন প্রচুর আছে, নিয়ম ভাঙার লোকও কিন্তু আছে। মানুষ যত সভ্য হচ্ছে, বিয়ের পুরোনো নিয়মগুলো তত ভেঙে পড়ছে। সমাজ বদলায় হাতে গোনা কিছু লোক। সমাজের সব লোক দল বেঁধে সমাজ বদলায় না। বেশির ভাগ লোক বরং দল বেঁধে প্রাচীন নীতি রীতি শক্ত করে আকঁড়ে রাখে। বিয়ের পর মেয়েদের চাকরি বাকরি ব্যাবসা বাণিজ্য চলবে না, স্বামীর আদেশ নিষেধ অমান্য করা চলবে না, বিধবা বিবাহ চলবে না-- এই নিয়মগুলো প্রাচ্যের কিছু সাহসী মেয়ে এখন আর মানে না। বিয়ের বিবর্তন ঘটেছে। বিয়ের উদ্দেশ্য পাল্টেছে, ধরণ পাল্টেছে। পাশ্চাত্যে, যেখানে মেয়েদের স্বাধীনতা আর অধিকারের সংগ্রাম দীর্ঘকাল চলেছে, এবং শেষ পর্যন্ত মেয়েরা অনেকটাই সমানাধিকার ভোগ করছে, সেখানে বিয়েটা এখন আর সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের নিশ্চয়তার জন্য নয়, মেয়েদের দিয়ে সংসার আর সন্তান দেখাশোনার কাজ কৌশলে করিয়ে নেওয়া নয়। সন্তান না জন্মালেও ক্ষতি নেই। সম্পর্ক আর সংসার সুখময় করার জন্য যে জিনিসের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা বিয়ে নয়, তা হলো, পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ। এ দুটো থাকলেই মানুষ পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকে। বিয়ে যদি বিশ্বস্ত রাখতে পারতো, তাহলে এত পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠতো না। বিয়ে না করে যারা সংসার করছে তাদের মধ্যেও পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ব থাকার একই অলিখিত শর্ত থাকে। সব দম্পতিই যে একগামিতা বা বিশ্বস্ততা চায়, তা নয়। কিছু স্বামী-স্ত্রী পরষ্পরকে ভালোবেসেও একঘেয়েমি দূর করতে ভিন্ন নারী ও পুরুষকে নিজেদের যৌনসঙ্গমে সঙ্গী হতে আমণ্ত্রণ জানায়। কোনও লুকোচুরি নেই, নিজেদের শোবার ঘরে, নিজেদের বিছানায়, দুজনের সঙ্গে যোগ হয় এক দুই তিন বা চার বা তারও চেয়ে বেশি। এই দলবদ্ধ যৌনতা দাম্পত্যজীবনে বৈচিত্র আনে, সম্পর্ককে তাজা রাখে। কিছু দার্শনিক গুচ্ছ-বিয়েকে বেশ জোরেসোরে সমর্থন করেছেন। বিয়ের বিচ্ছেদ না ঘটিয়ে সন্তানের সুবিধের কথা ভেবে গুচ্ছ-বিয়েই নাকি মেনে নেওয়াই নাকি বুদ্ধিমানের কাজ। গুচ্ছ-বিয়েটা অনেকগুলো নারী পুরুষেরা সমাহার, যারা সকলেই সকলের স্ত্রী বা স্বামী। গুচ্ছপ্রেম বা ‘পলিয়ামোরি’ বলেও একধরণের সম্পর্ক আছে। একাধিক নারী পুরুষ, প্রত্যেকে পরস্পরেরর প্রেমিক বা প্রেমিকা। বহুবিবাহ তো দীর্ঘকাল প্রচলিত ছিলই, এক স্বামীর বহু স্ত্রী। আবার আরেক ধরনেরও বহুবিবাহও কিছু কিছু সমাজে চলে, এক স্ত্রীর বহু স্বামী। দুনিয়াতে সবকিছুরই চর্চা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। কিন্তু সব ছাপিয়ে এক-স্বামী-এক-স্ত্রীর বিয়েই এখন পর্যন্ত রাজত্ব করছে। ছড়ি ঘোরানোটা এই সম্পর্কে বড় সুবিধে বটে। বিয়েটা মূলত যৌন সঙ্গমের লাইসেন্স। এই লাইসেন্সটাই ঢাক ঢোল পিটিয়ে নেওয়া হয়। নিতান্তই প্রাচীন, পিতৃতান্ত্রিক, অযৌক্তিক একটি প্রথা। এই প্রথাটির জীবিত থাকার কোনও কারণ নেই। অনেক প্রথাই মরে গেছে বা যাচ্ছে, যেমন সতীদাহ, যেমন ডাইনি-হত্যা, যেমন অগুনতি বিয়ে, আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে। অর্থহীন অনেক প্রথাই ভয় দেখিয়ে, বোধবুদ্ধির লোপ পাইয়ে দিয়ে চালু রাখা হচ্ছে বটে, তবে বড় জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রথার ব্যবহার না হতে থাকলে, প্রথা ধীরে ধীরে মরে যেতে বাধ্য। যেহেতু শতাব্দী ধরে প্রমাণ হচ্ছে বিয়ে কোনও নির্ণায়ক বিষয় নয় সম্পর্ক টেকানোর, তাই এটিরও ভবিষ্যত খুব উজ্জ্বল নয়। বিবর্তন আমাদের পূর্ব-পুরুষের লেজ খসিয়েছে প্রয়োজন নেই বলে। বিবর্তন আমাদের সমাজ থেকে বিয়ে নামক একটি অপ্রয়োজনীয় সংস্কার দূর করবে না, এ কোনও কথা? এককালের দার্শনিক নিৎসে, কান্ট, হেগেল প্রবল নারীবিরোধী ছিলেন। দর্শনেরও বিবর্তন ঘটেছে, নারীর প্রতি অমন তীব্র ঘৃণা নিয়ে আজকাল দার্শনিক বনার কোনও উপায় নেই। নারীর প্রতি ঘৃণার কারণে জন্ম নিয়েছে পুরুষতন্ত্র। পুরুষতন্ত্র জন্ম দিয়েছে অনেক নারীবিরোধী প্রথা, এর মধ্যে বিয়ে একটি। পুরুষতন্ত্র যত পরাজিত হবে, যত পর্যুদস্ত হবে, নারী যত তার স্বাধীনতা ফিরে পাবে, যত সে আত্মবিশ্বাসী হবে, যত সে নারীবিরোধী ধর্ম আর সংস্কারকে সমাজ থেকে ঠেলে সরাতে পারবে, বর্বরতাকে যত দূর করতে পারবে সমাজ, যত সভ্য হবে সমাজ, যত সভ্য হবে পুরুষ, পুরুষতান্ত্রিক প্রথার গায়েও তত মরচে ধরবে। আমরা এর মধ্যেই দেখছি সভ্য সমাজে বিয়ে কমে যাচ্ছে। অসভ্য-অশিক্ষিত-সমাজে বিয়ে প্রথা চলছে। কিন্তু একটি সমাজ তো চিরকাল অসভ্য আর অশিক্ষিত থেকে যায় না! সমাজও বিবর্তিত হয়। সমাজ সভ্য হয়েছে কখন বুঝবো? যখন দেখবো নারী আর ধর্ষিতা হচ্ছে না, নির্যাতিতা হচ্ছে না, পুরুষের দাসী বা ক্রীতদাসী বা যৌনদাসী কোনওটাই নয় নারী, তুমুল প্রেমে পড়ে একত্রবাস করছে কিন্তু বিয়ে নৈব নৈব চ, অথবা বিয়ে নামক জিনিসটিই বিলুপ্ত হয়ে গেছে, তখন। বিয়ের বিপক্ষে কথা বলেছেন অনেক নারীবাদী লেখক। আন্দ্রিয়া ডোরকিন তো মনেই করতেন, বিয়েটা স্রেফ ধর্ষণ করার জন্য। আর একজন বেশ চমৎকার বলেছিলেন, বিয়েটা নিতান্তই ‘ইনটিমেট কলোনাইজেশন’। অনেকেই মনে করেন, বিয়ের বাধাটা দূর না হলে মেয়েদের সত্যিকার স্বাধীনতা অনেকটা অসম্ভব। প্রায় সব নারীবাদীই বিশ্বাস করতেন, এখনও অনেকে করেন, যে, পুরুষতন্ত্র টিকিয়ে রাখার জন্য বিয়েটা বেশ অসাধারণ একটা প্রথা। নারীবাদীদের কেউ কেউ প্রেম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, প্রেমটা নাকি একরকম রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, মেয়েরা সেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বিয়ে করতে অর্থাৎ শত্রুর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। নারীবাদীদের কাছে বিয়েটা এত আপত্তিকর হতো না, স্ত্রীর ভূমিকা যদি এমন দাসী-বাঁদির না হতো। গ্লোরিয়া স্টাইনেমকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘এই যে বিয়ের বিরুদ্ধে এত গীত গেয়েছো, শেষে নিজেই যে বুড়ো বয়সে একটা বিয়ে করে বসলে, কারণটা কি?’ গ্লোরিয়া যে বন্ধুটিকে বিয়ে করেছিলেন, ওঁর নাকি খুব বড় অসুখ করেছিল, বিয়ে করলে গ্লোরিয়ার স্বামী হিসেবে স্বাস্থ্য বীমা পেতে সুবিধে হবে ওঁর, সে কারণেই বিয়ে। গ্লোরিয়ার জায়গায় আমি হলে বন্ধুকে সাহায্য করার বিকল্প ব্যবস্থা নিতাম, কিন্তু বিয়ে নামক পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে কিছুতেই আপোস করতাম না। বিয়ে যে জীবনে আমি করিনি তা নয়, করেছি, তখন করেছি যখন জানতাম না যে বিয়েটা আসলে নারীর ওপর পুরুষের প্রভুত্ব কায়েম করার একটা সামাজিক চুক্তিপত্র ছাড়া কিছু নয়। কেউ কেউ ঘা খাওয়ার আগে শেখে, কেউ কেউ আবার ঘা খেয়ে শেখে। আমার না হয় একটু ঘা খেয়েই শেখা হল। কিন্তু শেখা তো হল। কত কাউকে দিনরাত দেখছি, কোনওকিছুই যাদের কোনওকিছু শেখাতে পারে না। যখন সভ্য অসমকামীরা বিয়ে থেকে বেরিয়ে আসছে, তখন সভ্য সমকামীরা বিয়ের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে। সভ্য দেশগুলো ধীরে ধীরে সমকামীদের বিয়ে করার অধিকার দিচ্ছে। সভ্য মানুষেরা, এমনকী যারা বিয়েতে বিশ্বাসী নয়, তারাও সমকামীদের বিয়ের অধিকারের পক্ষে, যেহেতু সমকামীদের বিয়েটা সমাজের বেশির ভাগ লোক মেনে নেয় না। সমকামীদের বিয়ে সমর্থন করা মানে, ধর্মের শাসনকে আর রক্ষণশীল সমাজের চোখ রাঙানোকে মধ্যম আঙুল দেখানো। এ কথা ঠিক, সমকামীদের বিয়েতে সম-অধিকারের সম্ভাবনা অসমকামীদের চেয়ে বেশি কারণ ওদের মধ্যে লিঙ্গ-বৈষম্যের বালাই নেই। তবে এটা ঠিক, একসময় যখন সমকামীদের বিয়ে অসমকামীদের বিয়ের মতো ডাল-ভাত হয়ে উঠবে, তখন সমকামীরাও, যারা আজ বিয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে, অর্থহীন এই বিয়ে ব্যবস্থাটির বিরুদ্ধে মুখ খুলবে। বিয়ে নামের অপ্রয়োজনীয় একটি প্রথা মরে পড়ে থাকবে একদিন। আগামী দিনের সমাজবিজ্ঞানীরা ইতিহাস খুঁড়ে বিয়ের ফসিল আবিস্কার করবেন, আলোকিত মানুষকে পুরোনো দিনের গল্প শোনাবেন। --‘পৃথিবীতে একটি যুগ ছিল, সে যুগের নাম অন্ধকার যুগ। সেই অন্ধকার যুগে একটি প্রথা দীর্ঘদীর্ঘকাল টিকে ছিল, প্রথাটির নাম বিয়ে’। বিয়েটা কী এবং কেন, এসব বোঝাতে গিয়ে পুরুষতন্ত্রের প্রসঙ্গ উঠবে, তখন নিশ্চয়ই ভবিষ্যতের সেই সব মানুষের গা কেঁপে উঠবে বীভৎস একটা সমাজ কল্পনা করে।

তুরকি স্ত্রী ধূমপায়ী স্বামীর মস্তক টি খাঁচায় বন্ধী করে দিলেন


































রকমারিবিডি:একজন তুরকি  নারী তার স্বামীর পুরা মস্তক টি একটি খাঁচায় বন্ধী করে দিলেন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কেনও এইরকম কান্ড টা হল,আসল সত্য টা হলও উনার স্বামী প্রতিদিন কম হলে 40 টা সিগারেট ধুমপান করেন মানা বাধা করে যখন কোন লাভ হয় নাই তখন তিনি এমন ধরনরে চিন্তা করলেন যা কিনা অারব বিশ্বে তুলপাড় শুরু করে দিয়েছে রমজান মাসের শুরুতে তিনি স্বামীর মাতায় বসিয়ে দিলেন খাঁচাটি, এবং  সর্ত আরুপ করলেন সারা দিন রোজা রাকতে হবে এবং ইফতারের সময় হলে খুলে দেওয়া হবে খাঁচাটি ভাবেই চলতে থাকবে পুরো রমজান মাস, ভদ্র মহিলা আসা করেছেন  এমনটি করলে হয়তো স্বামির আনেক পুরানো বদ-অভ্যাস টি বদলাতে সফল হবেন আসল কতা হলো ধুমপানের মতও বধ অভ্যাস টি ত্যাগ করার জন্য রমজান মাস কে প্রাধান্য দিলে অনেক ধুমপায়ী দৃঘ্য  দিনের পুরানো অভ্যাসটি তেকে মুক্তী পেতে পারেন ।

Wednesday, 24 June 2015

ইফতারের পর মাঠে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব আসিফ কবির  ।
বাংলাদেশ-ভারত তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ একদিনের খেলা দেখতে আজ বুধবার ইফতারের পর মাঠে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব আসিফ কবির আজ এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
সফররত ভারতের সঙ্গে ১৮ জুন প্রথম ও ২১ জুন দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে এরই মধ্যে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি জিতলেই প্রথমবারের মত বাংলাওয়াশ হবে ভারত।

জোর করে পুরষাঙ্গ কেটে হিজড়া বানানো হয়.

প্রকৃতিগতভাবে নারী আর পুরুষের বাইরেও রয়েছে আরও ভিন্ন ভিন্ন নানান লৈঙ্গিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মানুষ। হিজড়া তাদের অন্যতম। এরা সাধারণত নেচে গেয়ে অর্থ উপার্জন করে। তাদের উপার্জনের টাকা দিয়ে কারো কারো আয়েশি জীবনযাপন করলেও সাধারণ হিজড়াদের দিন কাটে অভাব অনটনে।তবে ইদানিং স্বাভাবিক হিজড়াদের মধ্যে কিছু অস্বাভাবিক আচরণের হিজড়াদের আগমণ ঘটেছে। এই সব অস্বাভাবিক আচরণের হিজড়ারা প্রাকৃতিকভাবে পুরুষ। তবে পুরুষ হওয়ার পরও তারা হিজড়ার চরিত্রে অভিনয় করছে।
যেসব ছেলেদের মধ্যে একটু মেয়েলিপনা দেখা যায়, তাদের পুরুষাঙ্গ জোর করে কেটে হিজড়া বানানো হচ্ছে। ছেলেদের পুরুষাঙ্গ কেটে হিজড়া বানিয়ে এদের দ্বারা নানান অপরাধমূলক কাজ করিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। একুশে টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
রুবিনা ইয়াসমিনের ওই প্রতিবেদনে আরও দেখানো হয়, রাজধানীতে ভিন্ন ধরনের ছেলেধরার সন্ধান মিলেছে। যেসব ছেলেদের মধ্যে একটু মেয়েলিপনা আছে, তাদেরকে ধরে জোর করে পুরুষাঙ্গ কেটে হিজড়া বানানোর অভিযোগ উঠেছে ওই ছেলেধরা চক্রের বিরুদ্ধে। এমনই একজন ভুক্তভোগী সুমন। একুশে টেলিভিশনকে তিনি বলেন, ‘আমার নাম ছিল সুমন। এখন নাম হচ্ছে ঝুমা। আমি একসময় ছেলে ছিলাম। এখন আমাকে জোর করে হিজড়া বানানো হয়েছে’।
পুরো রাজধানী জুড়েই এরকম হাজার খানেক ছেলেকে হিজড়া বানিয়ে ব্যবসায় নামিয়েছে একটা চক্র। 
এই চক্রের অন্যতম খায়রুল ইসলাম ওরফে স্বপ্না হিজড়া। যিনি নিজেও ছিলেন ছেলে। অথচ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন হিজড়া সেজে। আরেক ভুক্তভোগী বললেন, তার গুরু (খায়রুল ওরফে স্বপ্না) ছেলে মানুষ। ওনার বউ আছে। দুটি জমজ বাচ্চা আছে বলেও জানায় তারা। বিভিন্ন জায়গায় তার বাড়ি ও প্লট আছে বলে জানা যায়। কিন্তু হিজড়া সেজে তার এ বিশাল সাম্রাজ্য যারা গড়ে দিয়েছে তারাও সবাই ছেলে। অন্য আরেক হিজড়া বললেন, ‘এলাকার জায়গা অর্ধেকটা কিনে ফেলেছেন। আর আমরা গরিব মানুষ , না খেয়ে মরতেছি’। 
প্রতিবেদনে দেখানো এমন আরেকজন রোমানা। একসময় স্ত্রী সন্তাান সবই ছিল। কিন্তু স্বপ্না তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে হিজড়া বানানোর ফাঁদ এঁটেছে। কথামত রোমানা তার পুরুষাঙ্গ কাটার জন্য ঢাকা থেকে নওগাঁ যাবে। একুশে টিভির টিম তার সাথে রওনা হয়। নওগাঁ বাসস্ট্যান্ডে স্বপ্নার ভাড়া করা দালাল শরিফ রোমানাদের সোজা নিয়ে যায় হাসপাতালে। একুশের টিম তাদেরকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। ডাক্তার খবর পেয়ে পালিয়ে যায়। অ্যাসিস্ট্যান্ট স্বীকার করেন যে, ২ হাজার টাকার বিনিময়ে সে এ কাজ করে থাকে। প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলে তারা নাকের ডগায় এমন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে জানতে পেরে হতভম্ব হয়ে পড়েন।

Tuesday, 23 June 2015

সৌদি আরবে আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) নামে আর কিছু থাকছে না।


প্রবাস ডেস্ক :: সৌদি আরবে আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) নামে আর কিছু থাকছে না। প্রবাসীরা পাচ্ছেন নতুন পরিচয়পত্র। যেটিকে এখন আকামার পরিবর্তে পরিচয়পত্র বলা হবে । আকামা জালিয়াতি বন্ধসহ তথ্য নিবন্ধন সহজ করার জন্য নতুন এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
সৌদি পাসপোর্ট বিভাগের প্রধান সহকারী পরিচালক কর্নেল খালেদ আল-সাইখান এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, আগামী ১৬ আগস্ট থেকে ডাকযোগে প্রবাসীরা নতুন রেসিডেন্ট আইডি কার্ড পাবে। এতে প্রবাসীদের সব ধরনের তথ্য থাকবে। অনলাইনে রিনিউ করা যাবে এই আইডি কার্ড।
তিনি আরো জানান, নতুন প্রযুক্তিতে আকামা জালিয়াতি বন্ধসহ তথ্য নিবন্ধন সহজ করার জন্য নতুন এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। নতুন রেসিডেন্ট আইডি কার্ডের জন্য বৃত্তি, কাজের যোগ্যতা, জাতীয়তা, ওয়ার্ক পারমিট সংখ্যা (যদি থাকে), ধর্ম এবং নিয়োগকর্তা ব্যক্তির নাম, সংখ্যা, তারিখ থাকতে হবে। যেটি আকামার পরিবর্তে পরিচয়পত্র বলা হবে ।

Sunday, 21 June 2015

স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে শাশুড়ি, শ্যালিকা ও ছেলেসহ চারজনকে কুপিয়ে হত্যা

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে শাশুড়ি, শ্যালিকা ও ছেলেসহ চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক ঘরজামাই।নিহতরা হলেন সুমনের শাশুড়ি সন্ধ্যা রানী হাসদা (৪৫), ছেলে সানী হেম্ব্রম (৬), শ্যালিকা তেরেজা (২৩) ও ফুফাশ্বশুর মার্কেল (৫০)।শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ভিমপুর আদিবাসী পল্লীতে এ ঘটনা  ঘটে।এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই পরিবারের ঘরজামাই সুমন হেম্ব্রমকে (৩৫) আটক করেছে পুলিশ।পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, প্রায় ১২ বছর আগে পাঁচবিবি নওনা গ্রামের সুমন হেম্ব্রমের সঙ্গে একই উপজেলার ভিমপুর গ্রামের ফনি মাস্টারের মেয়ের বিয়ে হয় তাদের ৩ সন্তান রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী সশিলা মার্ডির পরকীয়ার জের ধরে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল। একপর্যায়ে শুক্রবার রাতে স্বামী-স্ত্রী আবারও ঝগড়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় শাশুড়িসহ অন্যরা এগিয়ে এলে সুমন শাশুড়ি সন্ধ্যা রানী হাসদা, ছেলে সানী হেম্ব্রম, শ্যালিকা তেরেজা ও ফুফাশ্বশুর মার্কেলকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে। পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘাতককে হাতেনাতে আটক করেছে। জয়পুরহাটের সহকারী পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) রুবেল আহম্মেদ জানান, এ বিষয়ে থানায় মামলা করা হবে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

আমি কেঁদেছিলাম লিখাটা পড়ে......

শেয়ার করলাম তরুণ সমাজের সাথে।
আপনাদের সাথে শেয়ার
না করে পারলাম না...।
কিছুদিন আগে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু
এভিনিউ‘র
আইল্যান্ডে কে কারা একটি নবজাতকের
লাশ ফেলে যায়। সে নবজাতকের
লাশকে
ঘিরে সেখানে উৎসুক জনতার
ভিড় জমে।
এখন এই নবজাতকের লাশটা যদি
প্রশ্ন
করেঃ~
দশ মাস দশ দিন পরে,
...
জন্ম নেবো তোমার ঘরে, মাগো!
কি দোষ আমার,
একলা ফেলে... কোথায় তুমি ভাগো..?!
...
বাপের ১০ মিনিটের সুখ,
তোমার ১০ মাসের এক বোঝা,
সস্তা প্রেমের পরিণতি..
এতোটাই কি সোজা..!?
কি পাপ আমার,
আমারে ক্যান জলে ফেল্লি মা?
নর্দমাতে ডুবি আমি, সাতাঁর
জানি না..!
নাভিটাও কাটলিনা মা!
তুই যে বড়ই অলস!
"নাড়ি ছেঁড়া ধন" আমি তোর.. ক্যামনে এটা বলোশ..!?
মাগো..!! সমাজ ভয়ে হয়তো আমায়,
রাখলি নিচে নামায়..!!
১০ মিনিটের সুখের লাইগা,
আর মারিশ
না আমায়!!!!

Friday, 19 June 2015

তিনি এখন সফল

রাসেল আহমেদ
ছবি: সংগৃহীত
ধানখেতের পাশে কয়েকজন যুবকের হাতে ল্যাপটপ। একমনে তাঁরা কাজ করে চলেছেন। তাঁদের পেছনে দাঁড়িয়ে রাসেল আহমেদ। কেউ একটু সমস্যায় পড়লেই কীভাবে সমাধান করা যায়, তা দেখিয়ে দিচ্ছেন তিনি। ভেড়ামারা ডিগ্রি কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র রাসেল। শূন্য থেকে শুরু করে আকাশছোঁয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন এই যুবক। শুধু একা কাজ করে সফল হচ্ছেন, ভালো আয় করছেন, এমন নয়; গ্রামের অনেককেই নিজের কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। শিখিয়ে-পড়িয়ে তাঁদের দিচ্ছেন ভালো আয় করার পথের সন্ধান।
এখন প্রতি মাসে রাসেল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ফারাকপুর গ্রামে বসেই বিদেশের আউটসোর্সিং কাজ করে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করছেন। কীভাবে তা সম্ভব হলো? জানা যাক বিস্তারিত।
২০০৯ সালে গ্রামের বাজারে একটি দোকানে হঠাৎ কম্পিউটার দেখে থমকে দাঁড়ান রাসেল। প্রতিদিন কলেজ ছুটির পর সেই আশ্চর্য বস্তুটির কাছে হাজির হন। দেখতে দেখতে তাঁর মনে ইচ্ছা জাগে, কম্পিউটার শিখতে হবে।
রাসেলের জন্ম ১৯৮৯ সালে। বাবা মকবুল হোসেন পেশায় দরজি, মা রেহানা পারভীন গৃহিণী। মা-বাবা আর তিন ভাইবোনের সংসার চলে কায়ক্লেশে। কিন্তু কম্পিউটার তত দিনে জাদু করেছে রাসেলকে। তিনি বায়না ধরেন, পড়ালেখার পাশাপাশি কম্পিউটারের কাজ শিখবেন। ছেলের ইচ্ছা পূরণ হয় মায়ের বিয়ের কানের দুল বিক্রি করে। একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ভর্তি হয়ে যান রাসেল আহমেদ। মাসিক ১০০ টাকা বেতনে একটি চাকরিও জুটিয়ে ফেলেন।
কাজ করতে করতেই জানতে পারেন ইন্টারনেট থেকে আয় করা যায়। শুরু করেন ওয়েব ডিজাইন শেখা। একদিন পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারেন উপজেলা ই-সেন্টারে উদ্যোক্তা নিয়োগ হবে। সেখানে আবেদন করেন, চাকরিও পেয়ে যান। ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল ইসলামের সহযোগিতায় অনলাইনে আয় সম্পর্কে আগ্রহী হন। এ সময় খুলনাতে এক প্রশিক্ষণে গিয়ে আউটসোর্সিংয়ের কাজ পাওয়ার ওয়েবসাইট ওডেস্ক ডট কমে তিনি অ্যাকাউন্ট খোলেন। একটা কাজও পেয়ে যান। কাজটি ঠিকঠাক করায় আরও কাজ আসতে থাকে। প্রথম মাসেই আয় ১৫ হাজার টাকা। সেটা ২০১০ সালের শেষের দিকের কথা।
এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি রাসেল আহমেদকে। আউটসোর্সিং কাজের জন্যই ইংরেজি ভাষা শিখতে থাকেন, সঙ্গে ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব প্রোগ্রামিং।
গত অক্টোবর মাসে রাসেলের আয় হয়েছে দুই লাখ টাকা। ‘ডিজাইনিংওয়ে’ নামে নিজের একটি কোম্পানি তৈরি করেছেন। এই কোম্পানি বিভিন্ন বিদেশি গ্রাহকের কাজ করে দেয়। ওডেস্কের মতো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে না গিয়ে সরাসরিও অনেক কাজ পান তিনি। রাসেল বলেন, ‘আমি বাংলাদেশি হিসেবে গর্ববোধ করি। এত সীমাবদ্ধতা থাকার পরও আমি আমার কোম্পানিতে বাংলাদেশি মানুষদের প্রাধান্য দিচ্ছি।’
ভেড়ামারার গ্রামে বসে রাসেল এখন কানাডার মেশিন রিসার্চ অ্যান্ড সফটওয়্যার ফাউন্ড্রি লিমিটেডে চাকরি করেন। বেতন পান মাসে দেড় লাখ টাকা। যুক্তরাষ্ট্রের এটি প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরিও করেন। অস্ট্রেলিয়ার একজন উদ্যোক্তার সঙ্গে অংশীদার হয়ে চালাচ্ছেন একটি অনলাইন বিপণনপ্রতিষ্ঠান (ইয়োরমার্কেটিংসেলস)। রাসেলের অস্ট্রেলীয় অংশীদার স্থায়ীভাবে তাঁকে সে দেশে গিয়ে থাকা ও কাজ করার প্রস্তাব দিলেও হাসিমুখেই তা ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। গ্রামের বাড়িতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ পেয়েছেন। ফলে আউটসোর্সিংয়ের কাজটি আরও গতি পেয়েছে। রাসেলের ভাষায়, ‘এ দেশের সুযোগ-সুবিধায় বড় হয়েছি, তাই বিদেশে যাব না। আমি আমার গ্রাম থেকেই দেশকে অনেক উঁচুতে নিয়ে যেতে চাই।’
অনলাইনে যে কেউ যেকোনো জায়গা থেকে যেন কাজ শিখতে পারেন, সে জন্য আর আর ফাউন্ডেশন (www.rrfoundation.net) নামে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন রাসেল। উদ্দেশ্য, তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা। এই সাইটের ভিডিও টিউটোরিয়ালগুলো কম্পিউটারে নামিয়ে নিয়ে যে কেউ আউটসোর্সিং শিখতে পারবেন। পুরোটাই বিনা মূল্যে। এভাবেই নিজের গ্রামে থেকে রাসেল ছড়িয়ে পড়ছেন দেশময়, বিশ্বময়। দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন আরও উঁচুতে।
 আমিই বাংলাদেশ নিয়ে পরামর্শ ও তথ্য যোগাযোগ: ab@prothom-alo.info

পরকীয়া ক্যান্সারের চেয়েও ভয়ঙ্কর

গোলাম মাওলা রনি: মেয়েটি আমার অফিসে প্রথম এসেছিল বছর দুয়েক আগে। মাথায় হিজাব এবং সারা শরীর কালো বোরকায় ঢাকা। শরীরটি বেশ মোটাসোটা কিন্তু মুখটি অসম্ভব মায়াবী। বয়স বোঝার উপায় নেই। শরীরের ভাবগাম্ভীর্যে মনে হবে হয়তো পঞ্চাশ- আবার মুখচ্ছবি বলে দেয়- ওতো নয়; বড়জোর পঁচিশ বা ছাব্বিশ বছর হবে। আমার সামনে বসে সে রীতিমতো ঘামতে আরম্ভ করল। কেমন যেন ভয়ার্ত ভয়ার্ত ভাব। মাথা নুইয়ে হাতব্যাগে কি যেন খুঁজছিল। আমি খানিকটা বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম- কে আপনি! আমার কাছে কেন এসেছেন। মেয়েটি সলজ্জ ভঙ্গিতে মাথাটি নুইয়ে বলল- আমার নাম সুহালা (ছদ্মনাম)। আমি একাকী অনেক কবিতা লিখি, আপনাকে সেই কবিতাগুলো দেখাতে এসেছি।সুহালার কথা শুনে আমি যারপরনাই বিরক্ত ও বিব্রত হলাম। বললাম- আমার কাছে কেন! আমি তো কোনো কবি নই। তাছাড়া আপনাকে চিনি না জানি না, কোনো দিন কথাও হয়নি, হুট করে আমার রুমে এসে ঢুকে পড়লেন, এখন বলছেন কবিতা দেখাতে এসেছেন। সুহালা কি বুঝল জানি না- তার ডাগর ডাগর মায়াভরা দুটি অাঁখি মেলে এই প্রথম সে আমার দিকে সরাসরি তাকাল। আমি দেখলাম, মুহূর্তের মধ্যে তার চোখ দুটি অশ্রুতে পরিপূর্ণ হয়ে গেল এবং সেখান থেকে অঝোরে টপাটপ অশ্রু ঝরতে লাগল। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়লাম। আমার গলা শুকিয়ে গেল, হাত-পা কাঁপতে লাগল। আমি যে সময়টার কথা বলছি তখন রাজনৈতিক কারণে অনেকের সঙ্গে আমার বিরোধ তুঙ্গে। আমাকে সবাই নিষেধ করত অজানা লোকের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ দূরের কথা, ফোনেও যেন হাই-হ্যালো না বলি, বিশেষ করে মেয়েদের সঙ্গে। আমি এক গ্লাস পানি খেলাম এবং কম্পিত গলায় বললাম- কই আপনার কবিতাগুলো কোথায়! আমার কথা শুনে সুহালা ফিক করে হেসে দিল। কবিতা লেখা কাগজগুলো আমার সামনে মেলে ধরতে ধরতে বলল- স্যার! আমার বয়স মাত্র ২৭ বছর। আমি আপনার ছোট বোনের মতো। আমাকে তুমি করে বলবেন। আমি তার দিকে না তাকিয়ে দ্রুততার সঙ্গে কবিতাগুলোর ওপর নজর বুলাতে থাকলাম। বেশিরভাগই ছড়া। নিঃঙ্গতা এবং মনের কিছু আকুলতা ও ব্যাকুলতা প্রকাশের শিশুতোষ চেষ্টা। আমি প্রশ্ন করলাম, আপনি কি বিবাহিত? সে বলল, স্যার আমার বিয়ে হয়েছে ১৪ বছর আগে। তিনটি ছেলেমেয়ে। স্বামী দেশের নামকরা একটি গ্রুপে বড় চাকরি করেন এবং আমার আব্বা একজন প্রথম শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তা। সুহালার কথা শুনে আমার মনের ভয় ও জড়তা দূর হয়ে গেল। আমি আর দুই-একটি প্রশ্ন করে যা জানলাম তাতে বুঝলাম যে তার স্বামী বড়ই ধর্মভীরু এবং তাকে সব সময় কঠিন শাসনের মধ্যে রাখে। পর্দা মেনে চলাসহ ইসলাম ধর্মের খুঁটিনাটি সব বিষয় যাতে স্ত্রী অনুসরণ করে এ ব্যাপারে স্বামী একচুল ছাড় না দিতে নারাজ।
সুহালার কথার উত্তরে আমি বললাম বেশ ভালোই তো। তা তিনি তোমায় কিরূপে শাসন করেন? তাছাড়া তুমি কি কি বিষয়ে তার অবাধ্য হও? সে নির্দ্বিধায় বলল- আমার কোনো কিছু পছন্দ না হলে তিনি আমাকে ছেঁচা দেন। আমি প্রতিবাদ করি না। মেনে নিই। কারণ লোকটি ভালো, শুধু কথায় কথায় ধমক দেওয়া এবং বদমেজাজ দেখানো ছাড়া। আমি সব কিছুই তার হুকুম মতো করি। মাঝে মধ্যে গুনগুনিয়ে গান গাই- গোপনে কবিতা লিখি এবং আরও গোপনে ফেসবুকে চ্যাট করি। সে গান একদম পছন্দ করে না। আমাকে গান গাইতে শুনলে লাঠি নিয়ে তেড়ে আসে। বিয়ের পর শত বাধা সত্ত্বেও এমএ পাস করেছি- ইচ্ছা নিজে কিছু একটা করব। কিন্তু স্বামীর ভয়ে কিছুই করতে পারি না। সে এতটাই কনজারভেটিভ যে, রিকশায় পাশাপাশি বসে যদি একটু হাত ধরতে চাই তবে বকা দিয়ে বলে- ওসব হারাম। আমি কৌতুক করে বললাম, আজ যে আমার অফিসে কবিতা দেখাতে এসেছ সে কথা নিশ্চয় তোমার স্বামী জানে না। যদি জানে তবে কি হবে। সুহালা নিষ্পাপ হাসি দিয়ে বলল- ছেঁচতে ছেঁচতে ছাতুর মতো গুঁড়া করে ফেলবে। আমি বললাম- এখন বাসায় যাও! স্বামীর অনুমতি ছাড়া আর কোনো দিন বাইরে যেয়ো না। সে কি বুঝল জানি না- আমার কথা শুনে ওঠে দাঁড়াল এবং সালাম জানিয়ে চলে যেতে উদ্যত হলো। আমি তাকে খুশি করার জন্য বললাম- কবিতাগুলো কিন্তু সুন্দর হয়েছে! আর মেয়েদের গানের কণ্ঠ তো সব স্বামীরই বেজায় পছন্দ! সুহালা আবার বসে পড়ল এবং আমার টেবিলে মাথা রেখে অঝোরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে আরম্ভ করল। আমার নির্বুদ্ধিতার গুণমান দেখে মাঝে মধ্যে আমি নিজেই আশ্চর্য হয়ে যাই। স্ত্রী মহোদয়ার প্রশংসা না হয় বাদই দিলাম- আমার তিনটি সন্তান প্রায়ই আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে- ওরে আমার বোকা বাবারে! সুহালার কান্নার ঢং দেখে আমার মাথার ঘিলু বরফ হয়ে গেল। আমি আবার কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়লাম। আমার ভয় হলো- এ অবস্থায় রুমে ঢুকে কেউ যদি দেখে ফেলে তবে আমি কি জবাব দেব! আমি কি তাকে ধমক দিয়ে বলব- এই মেয়ে কান্না থামাও! বা একটু সান্ত্বনার স্বরে বলব- কাঁদছ কেন! আমার মাথায় কোনো কাজ করছিল না- একবার ভাবলাম দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে যাই। তারপর ও কাঁদুক- যত ইচ্ছা কাঁদুক। আমি দাঁড়ানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু আমার পা দুটো কেমন জানি অবশ অবশ মনে হলো। ঠিক এমন সময় সুহালা মাথা ওঠালো এবং কান্নারত অবস্থায় বলল- স্যার একটা টিস্যু দেবেন। আমি কম্পিত হস্তে টিস্যুর বঙ্ এগিয়ে দিলাম। সে চোখ, নাক এবং মুখমণ্ডল মুছে ঝড়ের গতিতে রুম থেকে বের হয়ে গেল।
সুহালা চলে যাওয়ার পর আমি তার অদ্ভুত আচরণ নিয়ে ভাবতে বসলাম। বহুক্ষণ ধরে বহুকাল ভেবে তেমন কুলকিনারা খুঁজে পেলাম না। আমার মনে হলো- ১৩ বছর বয়সে বিয়ে হওয়া একটি বালিকা তার চেয়ে কমপক্ষে ২০ বছরের বড় স্বামীকে প্রথম রাত থেকেই একটি মূর্তিমান আতঙ্ক মনে করে আসছে। গত ১৪ বছরে সে তিনটি সন্তানের মা হয়েছে। এমএ পাস করেছে এবং বিত্ত বিলাসে স্থূল দেহের অধিকারী হয়েছে বটে কিন্তু স্বামীর সামনে দাঁড়িয়ে নির্ভয়ে একটি টুঁ-শব্দ উচ্চারণ করার মানসিক জোর অর্জন করতে পারেনি। এরই মধ্যে একদিন দেখলাম ফেসবুকে সুহালা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। আমি সম্মতি দেওয়ার পর তার পোস্টগুলো আসতে লাগল। ছোট ছোট কবিতা- সবই বিষণ্নতায় ভরা, ২/১টা গানের অডিও ক্লিপ- মূলত বিরহাত্দক এবং মাঝে মধ্যে কিছু ছবি। এর কিছুদিন পর দেখি সুহালার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ডি অ্যাক্টিভেট করা। আমার কাছে তার কোনো ফোন নম্বর বা অন্য কোনো ডিটেইলস না থাকায় যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। ফলে ব্যস্ত জীবনের কর্মঘণ্টার চাপে আমি এক সময় সুহালাকে ভুলে যাই।
প্রায় সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎ করেই একদিন দুপুরে সুহালা আমার অফিসে এলো। আমার রুমে ভিআইপি গেস্ট ছিল। তাকে কনফারেন্স রুমে বসানো হলো। আমি এক ফাঁকে কনফারেন্স রুমে গিয়ে তাকে দেখে চিনতে পারলাম না। শরীর স্লিম হয়ে গেছে। পরনে কোনো বোরকা বা হিজাব নেই। আধুনিক স্যালোয়ার-কামিজ, স্নানগ্লাস এবং কার্লকরা ববকাট চুলের স্টাইল দেখে আমি থতমত খেয়ে গেলাম। সে সালাম দিয়ে বলল, রনি ভাই কেমন আছেন। আমি আরেক দফা হোঁচট খেলাম এবং বুঝতে পারলাম না- স্যার সম্বোধন থেকে হঠাৎ করে রনি ভাই বলার হেতু কি? সুহালা যেমন পরিবর্তিত হয়েছে, তেমনি গত দুই বছরে আমিও নিজেকে বাস্তবের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছি। যথাসম্ভব নির্লিপ্ত থেকে জিজ্ঞাসা করলাম- কি ব্যাপার। সিস্টার হঠাৎ আমার অফিসে! কোনো সমস্যা, সুহালা পুনরায় কান্নার চেষ্টা করল এবং ছলছল নেত্রে আমাকে কিছু কথা বলল। এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলার আগে শিরোনাম সম্পর্কে কিছু বলে নিই।
আমাদের বাল্যকালে মরণব্যাধি বলতে সাধারণত ক্যান্সারকেই বুঝতাম। ইদানীং ভয়াবহতার দিক থেকে এইডস এবং ইবোলা ক্যান্সারকে অতিক্রম করেছে। এক সময় ডায়রিয়া গুটিবসন্তও মরণব্যাধি ছিল। যক্ষ্মা, কুষ্ঠরোগ ইত্যাদিও কম ভয়ঙ্কর ছিল না। কিন্তু ভয়াবহতার জনপ্রিয়তার দিক থেকে ক্যান্সার এখনো এগিয়ে। কারণ শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ, রক্ত, অস্থিমজ্জা-এমনকি মস্তিষ্কের অতল গভীরে ক্যান্সার দানা বেঁধে মানুষকে শেষ করে দেয়। এ পর্যন্ত যত রোগবালাই পৃথিবীতে এসেছে তা কেবল দেহকেই আক্রমণ করেছে। মনকে করতে পারেনি। রোগাক্রান্ত শরীর অনেক সময় মনকে দুর্বল করে দেয় বটে কিন্তু আক্রান্ত হয়নি কোনো দিন। লক্ষ কোটি বছরের মানব মনের সেই ঐতিহ্য ইদানীং আর নেই। এখন মনুষ্য সমাজে, বিশেষত এই বাংলাদেশে, আরও পরিষ্কার করে বললে সব মহানগরী, নগরী এবং জনপদসমূহের লক্ষ কোটি নর-নারীর মন পরকীয়া নামক মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে তিলে তিলে ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজকে শেষ করে দিচ্ছে।
পরকীয়া একটি আদিম ব্যাধি। ইতিপূর্বে এই ব্যাধির অধিক্ষেত্র ছিল সীমিত পরিমণ্ডলে, লোকচক্ষুর আড়ালে। আমাদের ছোটবেলায় আমরা কোনো দিন শব্দটি শুনিনি। কিছু প্রভাবশালী পুরুষ ছিল যারা একাধিক বিয়ে থা করে শান্তিপূর্ণভাবে ঘর-সংসার করত। লুচ্চা প্রকৃতির গরিব মানুষেরাও তিন/চারটা বিয়ে করত। কিছু কুলটা নারী পতিতালয় চলে যেত। অন্যদিকে চরিত্রহীন পুরুষরাও গোপনে নিষিদ্ধ পল্লীতে গমন করত। কিন্তু নিজের স্ত্রী রেখে পরস্ত্রী বা কন্যাসম কোনো নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক কল্পনাই করা যেত না। অন্যদিকে নারীরা নিজেদের সব সময় একটি সম্মানিত অবস্থানে ধরে রাখার চেষ্টা করতেন। কোনো বয়স্ক নারী তার ছেলের বয়সী পুরুষ কিংবা বালকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক করবে একথা কাউকে বিশ্বাস করানো যেত না।
সমাজের উপরের স্তরে, অর্থাৎ নেতৃত্ব পর্যায়ে যৌন বিকৃতি ছিল না বললেই চলে। কোনো ধর্মপরায়ণ হিন্দু বা মুসলমান জেনা, ব্যভিচার বা সমকামিতায় নিজেকে জড়িত করবে এমন বদনাম সমাজের নিকৃষ্ট এবং মন্দ লোকেরাও কোনো দিন করত না। চরিত্রের মধ্যে লুকোচুরি, মোনাফেকি এবং ভণ্ডামির মাত্রা খুব কম ছিল। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সবাই প্রয়োজন-ইচ্ছে কিংবা রঙ্গরস করার জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে একাধিক বিয়ে করত এবং সব স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব বহন করত। অন্যদিকে কোনো গৃহস্থের চার নম্বর পত্নী হওয়া সত্ত্বেও কোনো গৃহবধূ অন্য কোনো নাগরের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে এমন সংবাদ লোকমুখে শোনা যায়নি।
বাঙালির সেই সুদিন আর নেই। প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সমাজে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে অমানবিক, নৃশংস এবং নির্মম পরকীয়া নামক বিষবাষ্প। হাজার কোটি টাকার মালিকের শিল্পপতির স্ত্রীর নজর এখন পিয়ন-ড্রাইভার এবং দারোয়ানের দিকে। কাজের বুয়ার ওপর গৃহকর্তার পাশবিক লোলুপ দৃষ্টি তো বহু পুরনো বাত হ্যায়। নতুন খবর হলো- মেয়ের ছেলেবন্ধুর হাত ধরে ৫৫ বছর বয়স্ক মহিলার গৃহত্যাগ। ৭০ বছরের বৃদ্ধ জোর গলায় বলে বেড়াচ্ছে তার নাকি ১০০র ওপর বান্ধবী আছে যাদের বয়স ৪০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। ৬৬ বছর বয়সের এক বৃদ্ধ বলল- তার আছে ২০ জন বান্ধবী যাদের সবার বয়স ৩০ বছরের মধ্যে। দেশের পাঁচতারা একটি হোটেলে রুম ভাড়া করে লোকটি প্রতি সপ্তাহে পালা করে চারজন বান্ধবীকে সঙ্গ দেয় এবং এসব খবর নাকি ওই মেয়েদের স্বামীরা জানে (নাউজুবিল্লাহ)।
পরকীয়ার সীমাহীন বেদনায় হাজার হাজার পরিবার ভেঙে যাচ্ছে। যাদের বিকল্প পথ নেই তারা হয়তো জীবিকার প্রয়োজনে একসঙ্গে থাকে কিন্তু নিত্যকার ঝগড়াঝাটি, অবিশ্বাস, মারামারি আর গুঁতাগুঁতিতে প্রতিটি ঘরের ছাদের নিচের অংশ যেন একেকটা জাহান্নামের টুকরা হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মূল্যবোধ, ভেঙে পড়েছে পারিবারিক বন্ধন, একে অপরকে শ্রদ্ধা তো দূরের কথা উল্টো মূল্যবোধ প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ, একজন অন্যজনের সঙ্গে পাল্টা দিয়ে একই ধরনের অনৈতিক কর্মে জড়িয়ে পড়ছে, নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়াসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সামাজিক-পারিবারিক এবং ব্যক্তির এতসব নৈতিক অবক্ষয়ে আমরা কেমন যেন চুপ থেকে ক্রমাগতভাবে ধ্বংসের দিকে এগুচ্ছি। অন্যদিকে রাষ্ট্র যেন এসব ব্যাপারে মূক ও বধির হয়ে গেছে।
বলতে গেলে অনেক বলা যাবে- রচনা করা যাবে মহাকাব্য কিংবা ডিজিটাল কাম শাস্ত্র। সেদিকে না গিয়ে সুহালার প্রসঙ্গ বলে আজকের লেখা শেষ করব। সুহালা জানাল যে, তার অতি ধার্মিক জামাই ইদানীং দুটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া করছে এবং রাত-বিরাতে বাইরে সময় কাটাচ্ছে। সংসারে একদম মন নেই। তাকে ২০ লাখ টাকা সাধছে এবং বলছে- যেখানে খুশি সেখানে চলে যাও, যা ইচ্ছা তাই কর কিন্তু আমার পথে বাধা হইয়ো না। ছেলেমেয়েরা অসহায় অবস্থায় বাবা-মার ঝগড়াঝাটি, মারামারি দেখতে দেখতে বিপথে চলে যাচ্ছে- লেখাপড়া করছে না। এ অবস্থায় সুহালা কি করবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে আমি বললাম- পারলে তথ্য-প্রমাণসহ স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা কর, নইলে চুপচাপ থাক। মাঝামাঝি অবস্থানে থেকে ঝগড়াঝাটি করে হররোজ মার খাওয়ার দরকার নেই আর স্বামীর দেখাদেখি নিজেকে কুপথে চালিত কর না- তোমার পোশাক-আশাকের পরিবর্তন আমার কিন্তু ভালো লাগেনি। সুহালা কি বুঝলো বলতে পারব না তবে সে আগের মতো কাঁদল না- বরং নির্লিপ্তভাবে উঠে দাঁড়াল এবং বলল- আচ্ছা ভাইয়া ঠিক আছে- দোয়া করবেন!

সেই ভিডিও এখনো চলছে!

মডেল এবং অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভার সাথে তার প্রেমিকের করা সেই ভিডিও এখনো চলছে। বেশ খোলামেলা এ ভিডিওটি একেবারেই ছোটদের উপযোগী নয়।
 অনেক ক্ষেত্রে অভিনেত্রী প্রভা ভিডিওচিত্রটিতে এতো খোলামেলা হয়েছেন, যেখানে সানি লিওনির মতো ব্লু ফিল্মের নায়িকারাও হার মানবেন।
ইতিমধ্যে বহুবার ইউটিউবে ভিডিওটি সরিয়ে নেয়া হলেও আবারও নানা মাধ্যমে ভিডিওটি দেখা যাচ্ছে। পাঠক দেখুন এখনো ভিডিওটি অনলাইনে দেখা যাচ্ছে। 

ক্ষমা চাইলেন প্রভা, কিন্তু... !

নিজের ভুলের জন্য সবার  কাছে ক্ষমা চাইলেন আলোচিত অভিনয়শিল্পী সাদিয়া জাহান প্রভা।দরর্শক ক্ষমা করে দিলে কি হবে,প্রভার রগরগে ভিডিও এখনো ইন্টারনেটে আছে। মনে হয়  প্রভার আলোচিত ভিডিও টি  ইন্টারনেটের জগত হতে মুছে ফেলা য়াবে না ।

অভিশাপ দেয়ায় জরিমানা !

এক ব্যক্তি তার সহকর্মীকে অভিশাপ দিয়েছিলেন।ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং সেবা হোয়াটসঅ্যাপে। ঘটনাটি ঘটে গেলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে দেশটির আইন অনুযায়ী, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ভঙ্গ করতে পারবেন না। নীতিমালা ভঙ্গ করলে গুণতে হবে বড় অঙ্কের অর্থদ-। সম্প্রতি  পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন এক ব্যক্তি, হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো এক বার্তায় তার সহকর্মী তাকে অভিশাপ দিয়েছেন এবং তার ক্ষতি করার হুমকিও দিয়েছেন। তিনি তার মোবাইল ফোনটি উপস্থাপন করেছেন আদালতে প্রমাণস্বরূপ তাকে কি লিখেছিলেন ওই ব্যক্তি তা প্রকাশ করা হয়নি।তবে অভিযোগটি দেশটির সাইবার দ-বিধির আওতায় পড়ে।সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শীর্ষ আদালত এ অপরাধে ওই ব্যক্তির স্বল্প অর্থ-দন্ড রায় বাতিল করে দিয়েছে। ফলে, বড় অঙ্কের অর্থ-দন্ড দিতে পারে আদালতব্যক্তিকে অভিশাপ দেয়ার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায়, নিম্ন আদালতের দুটি রায়ে ওই ব্যক্তিকে মাত্র ৮০০ ডলার জরিমানা পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল।সর্বোচ্চ আদালত ফেডারেল সুপ্রিম কোর্ট (এফএসসি) রায় দুটি বাতিল করে দেয়।নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর রায় দেয়া হয়। জরিমানা হিসেবে তাকে ৮০০ ডলারের অদিক অর্থ পরিশোধ করতে হতে পারে।নতুন আইনে জরিমানাসহ কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে।
প্রবাসীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে, তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের বিধান রয়েছে। নতুন বিচার প্রক্রিয়া কবে নাগাদ শুরু হবে, তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। ওই ব্যক্তির পরিচয় বা জাতীয়তা প্রকাশ করেনি আদালত। এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তি সব অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে কেউ যদি মধ্যাঙ্গুলি প্রদর্শনের ইমোটিকন পাঠান, তিনিও একই সাইবার দ-বিধির আওতায় পড়বেন। 

ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দেয়া কে এই মুস্তাফিজ ?

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট, – ১২৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকছিল সফরকারী ভারত। এরপর রায়না ও জাদেজা মিলে অসাধারণ এক জুটি গড়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচের লাগাম নিজেদের হাতে নেয়ার জোর চেষ্টা চালান। তবে মুস্তাফিজুর রহমানের জোড়া আঘাতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় স্বাগতিক বাংলাদেশ। ৩৭তম ওভারে পরপর দুই বলে রায়না ও অশ্বিনকে আউট করে বাংলাদেশকে জয়ের পথেই রাখেন এই অভিষিক্ত পেসার। মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৮৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের প্রহর গুনছে ধোনির ভারত। বাংলাদেশ শিবির অপেক্ষা করছে জয়ের। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেই উত্তেজনা-রোমাঞ্চ বেশ জেঁকে ধরেছে টাইগার সমর্থকদের। ভারতের বিরুদ্ধে জয়ের নেশায় বুদ গোটা বাংলাদেশ। জয়ের জন্য চ্যালেঞ্জিং স্কোরও গড়েছে বাংলাদেশ।
দক্ষিন বঙ্গের সুন্দরবনের কোলঘেঁষে প্রকৃতির নৈস্বর্গীক জেলা সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার তেতুলিয়া গ্রামের ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান। ১৯৯৫ সালে জন্ম নেয়া ১৯ বছর বয়সি এই মুস্তাফিজুর আজ বাংলাদেশ ক্রিকেটের পুরদস্তুর এক বোলার।
অনুর্ধ-১৯ দলের অসামান্য প্রতিভাধারী এই পেসার ইতিমধ্যে দেশ ছাড়িয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পরিমণ্ডলে। সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের একমাত্র টি-২০ খেলার মধ্যদিয়ে ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পা রেখেছেন সাতক্ষীরার এই তরুণ টাইগার। নির্বাচকদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করে নিয়েছেন বাংলাদেশ-ভারত সিরিজেও।
ঘরের মাঠে এই সিরিজে ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে সাফল্যের জন্য অনেকটা বোলারদের পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করবে। আর এরই প্রেক্ষিতে মাশরাফি, রুবেল ও তাসকিনের সাথে সঙ্গ দেওয়ার জন্য এই তরুণ বোলারই হয়ত হয়ে উঠতে পারেন বাংলাদেশ তথা মাশরাফির মোক্ষম হাতিয়ার।
এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবারের মত
খেলতে নেমে দুই উইকেট তুলে নিয়ে চমক দেখিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। যার একটি শহিদ আফ্রিদির। গত প্রায় ১৯টি বছর যে ব্যাটসম্যানের নাম শুনলে বোলারদের হৃদয়ে কাঁপুনি ধরে যেতো, সেই ড্যাশিং ব্যাটসম্যান শহিদ আফ্রিদির উইকেট নিয়ে অভিষেক, সত্যি সত্যি বিস্ময়কর। বাংলাদেশের নতুন বাঁ-হাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুন পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে সুযোগ পেয়ে যান পাকিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টি২০ ম্যাচটিতে। ম্যাচের বোলিং ওপেনই করলেন মোস্তাফিজু। কিন্তু প্রথম বলেই ওয়াইড দিয়ে ক্যারিয়ার এবং ইনিংস শুরু করলেন বাঁ হাতি এ পেসার। প্রথম দুই ওভারে রান দিলেন মাত্র ৫টি। ১১তম ওভারে তাকে আবারও নিয়ে আসা হয় বোলিংয়ে। এবার প্রথম তিন বলেই দিলেন ১১ রান। কিন্তু চতুর্থ বলেই তুলে নিলেন আফ্রিদির উইকেট। তার আউটসুইঙ্গার আফ্রিদিও ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে মুশফিকের হাতে। বিস্ময়ের এই অভিষেকটাই হলো বাংলাদেশের নতুম বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের। এরপর ১৮তম ওভার করার জন্য আবারো মোস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন মাশরাফি। এবার প্রথম বলেই ২ রান এবং দ্বিতীয় বলে ১ রান দেন তিনি। তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে হাফিজ ব্যাটেই বল লাগাতে পারলেন না। পঞ্চম বলে গিয়ে হলেন পুরোপুরি পরাস্ত। এলবিডিব্লউর জোরালো আবেদন। আম্পায়ার আঙ্গুল তুলে জানিয়ে দিলেন আবেদন সঠিক। হাফিজকে ফিরিয়ে দিয়ে অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখলেন মোস্তাফিজ। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন এ দু’টি মূল্যবান উইকেট। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুন পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে সুযোগ পেয়ে গেলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টি২০ ম্যাচটিতে। গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে ঠাঁই পান ১৯ বছর বয়সী খুলনার এই ক্রিকেটার। মাশরাফি-তাসকিনদের সঙ্গী বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে জাতীয় দলের ক্যাপ পরিয়ে দেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। সাকিব আল হাসান ক্যাপ পড়ান সৌম্যকে। মুস্তাফিজ ৪৪তম ও সৌম্য ৪৫তম টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার। গত বছরের এপ্রিলে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় মোস্তাফিজের। সাতটি ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ২৩ উইকেট। আর পাঁচটি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ১২টি উইকেট দখল করেন।
মোস্তাফিজুর রহমান সম্পর্কে প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন, ‘মোস্তাফিজুরকে দলে নেয়াটা অনেকের কাছেই বিস্ময়কর মনে হতে পারে। অনূর্ধ-১৯ দল ও ‘এ’ দলের হয়ে সে দারুণ বোলিং করে আমাদের নজড় কেড়েছে। মোস্তাফিজ একজন মেধাবী বোলার।
তার ডেলিভারীতে যথেষ্ট বৈচিত্র আছে, যা শর্ট ভার্সনে কার্যকরী হতে পারে।’ গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়ানডে দলে অভিষেক হওয়া সৌম্য সরকারেরও এ দিন টি-২০ অভিষেক হয়েছে। ওয়ানডে ওপেনার হিসেবে এরই মধ্যে নিজেকে প্রমাণ করেছেন সৌম্য সরকার। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে ১২৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তবে প্রথম টি-২০তে কোন বল না খেলেই দুর্ভাগ্যজনক রানআউট হয়ে শূন্য রানে আউট হয়েছেন এ অভিষিক্ত ওপেনিং ব্যাটসম্যান।
বাংলাদেশ-ভারত সিরিজে সুযোগ পাওয়ার পর  মুস্তাফিজুর রহমানের দারা  ভবিষ্যতে বিশ্বকাঁপানো টাইগারের প্রতিমূর্তি দেখতেই পারি আমরা কোটি বাঙ্গালীরা। আর এই মুহুর্মুহু জ্বলে ওঠা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার।

মুসলমানদের পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ওবামা"

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামা যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।হোয়াইট হাউস থেকে গত বুধবার পাঠানো এক বিবৃতিতে এ শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রে ,সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও গতকাল সিয়াম-সাধনার মাস শুরু হয়।মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, পবিত্র রমজান মাস ‘ধর্মবিশ্বাস, সহানুভূতি ও ক্ষমাশীলতা বৃদ্ধি এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে উদ্যম বজায় রাখা’র সময়। শুভেচ্ছা-বার্তায় ওবামা বলেন, রমজানে পরিবারসহ সম্প্রদায়ের সবাই একসঙ্গে ইফতার ও নামাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মুসলমানদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এদিকে মুসলমান রোজাদারদের জন্য রমজান মাসে হোয়াইট হাউসে একটি ইফতার পার্টির আয়োজন করা হবে বলে জানা গেছে। 

Wednesday, 17 June 2015

মুসলিম ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা ,গ্রেপ্তার ১ জন

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটিকে ইস্যু বানিয়ে মুসলিম ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগে এস এম সাখাওয়াৎ হোসেন নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার এল-ব্লকের ১৯ নম্বর বাসার ৫ম তলায় থাকত। তার কাছ থেকে একটি মিনি ল্যাপটপ, একটি সিপিইউ ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ সব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার সাখাওয়াৎকে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনলাইনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিভিন্ন ভিডিও ও লেখা পোস্ট করে মুসলমানদের বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উস্কানি দিচ্ছিল। এ জন্য সে নিজের একটি অনলাইন পোর্টাল ও ফেসবুক পেজে এগুলো পোস্ট করছিল। দেশের শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তির মাধ্যমে উস্কানি সৃষ্টি করে দেশের জনগণের শান্তি নষ্ট করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোই তার মূল উদ্দেশ্য ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাখাওয়াতের অন্য কোনো পরিকল্পনা ছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক তথ্য জানা যাবে। তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ৫৭ ধারায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন/২০০৬ এ একটি মামলা করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার সাখাওয়াৎ Islamicnews24.net নামক একটি পোর্টালের সম্পাদক বলে ডিবি পুলিশকে জানিয়েছে। তাকে ৮৫/১ নম্বর পুরানা পল্টন থেকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ (ডিবি)। সুএ কালের কন্ঠ

ভারতের বিপক্ষে বরাবরই জ্বলে উঠেন মাশরাফি

বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ওয়ানডে শুরু হবে বেলা তিনটায়।
মুখে প্রতিশোধের কথা বলেননি বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার। বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলার স্বপ্নভঙ্গের বেদনা এখনও ভোলেননি তারা। সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার প্রথম সুযোগটি হারাতে চাইবেন না স্বাগতিক দলের খেলোয়াড়রা।
টেস্টে পেরে না উঠলেও ওয়ানডেতে ভারতের সঙ্গে সমান তালেই লড়ে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপের মতো টুর্নামেন্টে শক্তিশালী এই প্রতিবেশীর বিপক্ষে জয় রয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজাদের।
ভারতের বিপক্ষে আরেকটি জয় সিরিজে এগিয়ে নেওয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করবে। ইংল্যান্ডে ২০১৭ সালে হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টে খেলতে হলে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত র‌্যাঙ্কিংয়ে ৮ নম্বর স্থান ধরে রাখতে হবে বাংলাদেশকে। ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের মধ্যে একটিতে জিততে পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে সাতে চলে আসবে বাংলাদেশ, যা সেই টুর্নামেন্টের পথে এগিয়ে নেবে মাশরাফিদের। প্রথম ম্যাচ জিতেই নিজেদের সেই নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে চায় তারা।
দেশের মাটিতে টানা আটটি ওয়ানডেতে জেতা বাংলাদেশের জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব হবে না। এই সময়ে জিম্বাবুয়েকে ৫-০ ও পাকিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হারায় মাশরাফিরা।
টেস্টের মতো ধারহীন নয় বাংলাদেশের ওয়ানডে বোলিং। পেস ত্রয়ী মাশরাফি, রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদের যে কোনো দলের বিপক্ষেই জ্বলে ওঠার সামর্থ্য আছে। প্রথম ওয়ানডেতে তাই বাইরেই থাকতে হতে পারে তরুণ বাঁহাতি মুস্তাফিজুর রহমানকে।
ভারতের বিপক্ষে বরাবরই জ্বলে উঠেন মাশরাফি। তাসকিন-রুবেলের সামর্থ্য আছে গতি দিয়ে অতিথিদের এলোমেলো করে দেওয়ার।
চোট থেকে সেরে উঠেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং করতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না তার। মাশরাফি নিজেই জানিয়েছেন, প্রথম ওয়ানডে খেলবেন তিনি। নিজেদের পেস আক্রমণ নিয়ে সন্তুষ্ট দেশসেরা এই পেসার।
“অধিনায়ক হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, এই মুহূর্তে আমার কাছে বেশ ভালো একটা পেস অ্যাটাক আছে। যারা যেকোনো দলের বিপক্ষে ভালো করতে পারবে।”
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণও সমীহ করার মতো। দুই বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান ও আরাফাত সানির উপস্থিতিতে স্বাগতিকদের বোলিং আক্রমণ যথেষ্ট ধারাল। পেসারদের কাজটা সহজ করার সামর্থ্য তাদের ঠিকই আছে।    
প্রয়োজনে নাসির হোসেন, সাব্বির রহমানদের দিয়েও কিছু ওভার করাতে পারবেন মাশরাফি। দলের ফিল্ডিংয়ের মান নিয়ে ভীষণ খুশি তিনি। ব্যাটিং ও বোলিং নিয়েও কোনো দুর্ভাবনা নেই তার। তাই জয়ের স্বপ্ন দেখছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
“আমাদের ব্যাটিং শক্তিশালী। আমাদের বোলিংও খারাপ নয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের ভালো একটি সিরিজ গেছে।”
ওয়ানডেতে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ সফল বাংলাদেশ। র‌্যাংঙ্কিংয়েও পড়েছে তার ছাপ। অস্ট্রেলিয়া, ভারতের মতো দলগুলোর চেয়ে এখন নিজেদের খুব একটা পিছিয়ে রাখছেন না বাংলাদেশের অধিনায়ক।
বাংলাদেশের ওয়ানডে দলকে সমীহ করার কথা বলেছেন ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। মাশরাফি মনে করেন, নিজেদের পারফরম্যান্সেই প্রতিপক্ষের এই শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন তারা।
“এখন বিশ্বে যতগুলো দল ওয়ানডে ভালো খেলছে বাংলাদেশও তার একটি। আমরা ভালো খেলছি বলেই এখন সবাই এই কথা বলছে। আমাদের এটা মাঠে দেখাতে হবে। এটা কোনো চাপ নয়, ভালো খেলতে থাকলে নিজের ভেতর আত্মবিশ্বাস থাকেই।”
পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ সিরিজে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং বীরত্বে সাকিব-সাব্বির-নাসিররা খুব একটা ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকারের কাছ থেকে একই রকম ইনিংস দেখতে চান মাশরাফি।
প্রথম দুই ওয়ানডেতে শতক করেন তামিম। তৃতীয় ওয়ানডেতে শতক করেন তরুণ সৌম্য। নাসির পুরো সিরিজে কেবল একটি বল খেলার সুযোগ পান।
তিন নম্বরে মাহমুদউল্লাহর অভাব অনুভব করবে বাংলাদেশ। তার জায়গায় লিটন দাসের অভিষেক প্রায় নিশ্চিত।
প্রথম ওয়ানডেতে লড়াই আশা করছেন মাশরাফি, “ভারতের সাথে খেলা সবসময় চ্যালেঞ্জিং। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভারত ফেভারিট। বড় দলের সঙ্গে খেলা হলে তারাই স্বাভাবিকভাবে ফেভারিট হয়। তবে আমরা কিন্তু এটা চিন্তা করি না যে, আমরা তাদেরকে হারাতে পারব না। আমরা অবশ্যই জেতার জন্যে খেলব।”
জয় ছাড়া আর কিছু ভাবছে না ভারত। বাংলাদেশের প্রতি সমীহের কমতি নেই অতিথিদের। কিন্তু নিজেদের সামর্থ্যের ওপরও পূর্ণ আস্থা রয়েছে তাদের।
একটি পরিবর্তন ছাড়া বিশ্বকাপ কোয়ার্টার-ফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা ভারত দলটিকেই দেখা যেতে পারে প্রথম ওয়ানডেতে। চোটের কারণে দলে না থাকা মোহাম্মদ সামির জায়গায় ফিরতে পারেন ভুবনেশ্বর কুমার।  
প্রথম ওয়ানডে খেলার আগে বৃষ্টির কথাও ভাবনায় রাখতে হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতকে। ফতুল্লায় একমাত্র টেস্টে যে ভারতের বদলে জয় হয়েছিল বৃষ্টিরই।