আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে দেহ ব্যবসা। প্রেমিকের প্রতারণা, দারিদ্রতা, স্বামীর অত্যাচার, বিবাহ বিচ্ছেদ,ইয়াবা সেবন, বিলাসিতা ও অতিরিক্ত যৌন চাহিদার কারণে এই অন্ধকার পথে নেমেছে বহু নারী। আর ওই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে বেশ কয়েক’টি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। আবার পুলিশও এই সিন্ডিকেটগুলো থেকে মাসোয়ারা পাচ্ছে। এই নিয়ে নগরবাসী এবং অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, প্রাচ্যের রাণী নামে খ্যাত এই চট্টগ্রামে বিগত দুইযুগ ধরে দেহ ব্যবসা চলছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে এর পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়েছে। শহরের আবাসিক হোটেল ছাড়াও বাসা-বাড়ীতে এই ব্যবসার সম্প্রসারণ হওয়ায় অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। ১৫বছর থেকে শুরু করে ৫০ বছরের বিভিন্ন ধরণের নারী এই পেশায় নেমে পড়েছে। স্কুল-কলেজের ছাত্রী,গৃহবধূ, বীমা কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্কুলের শিক্ষিকা, বিউটিশিয়ান, গামেন্টস কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অবিবাহিত নারী এই দেহ ব্যবসায় নানা কারণে জড়িত। তবে এদের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার ভেদে রেইট রয়েছে। উচ্চবিত্ত,মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত নারীরা প্রকারভেদে মূল্য নেয়। তবে এই পেশায় নানা কারণে নারীরা জড়িত হয়েছে বলে সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো দাবি করছে। এরমধ্যে দারিদ্রতা , উচ্চ বিলাসিতা ও অতিরিক্ত যৌন ক্ষুধার কারণ অন্যতম।
সূত্র জানায়, শহরের অন্তত কয়েক হাজার স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া মেয়েরা চাকুরী, টিউশনি ও ক্লাস করার নামে দিনে-রাতে বাইরে গিয়ে মুলত দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বাসা-বাড়ী কিংবা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বেশকিছু নারী নিজকে ছাত্রী অথবা গৃহবধূ পরিচয় দিয়ে স্বজন নামে কথিত দালালদের মাধ্যমে এই দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক অভিভাবক মনে করছেন- তার আদরের মেয়েটি কলেজে কিংবা কোচিংয়ে পড়তে যাচ্ছে। আসলে তারা টাকার বিনিময়ে ছেলে বন্ধুদের দ্বারা মোবাইল ফোন পেয়ে ছুটে যাচ্ছে অন্যের শয্যা সঙ্গিনী হতে। শুধু কি তাই ;নারী নেত্রী ও কন্ঠ শিল্পীও এই দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে বলে বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেছে। আগে হোটেলগুলোতে খদ্দের গেলে তাৎক্ষনিক মেয়ে পাওয়া যেত। এখন হোটেল বুকিং দিয়ে হোটেলের দালালদের মাধ্যমে ১হাজার টাকা থেকে ১০হাজার টাকা দিলেই বিভিন্ন ক্যাটাগরীর নারী নিয়ে রাত যাপন করা যাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়েই এই কাজ সারতে হয়।
খদ্দেরদের ভাষায়- না হয় পুলিশের ঝামেলা রয়েছে। শহরের আগ্রাবাদের এক গৃহবধূ বলেন, স্বামী বেকার। এরপরেও রাতে বাসায় এসে আমাকে মারধর করে। তাই পিতার বাসায় রয়েছি। কিন্তু পিতা কতদিন বসিয়ে আমাকে খাওয়াবে? তাই পেটের দায়ে খারাপ কাজে এসেছি। এই কথা বলেও কেঁদেও দেন তিনি।
এসময় তার সাথে কলেজ পড়ুয়া এক নারী আক্ষেপ করে বলেন, ভাই বাসা-বাড়ীতে গত বছর প্রাইভেট পড়াতে গিয়েছি। কিন্তু বাসার মালিক আমাকে দিয়ে বাচ্চা পড়াতে আগ্রহী নয়। আমার সুন্দর শরীরের দিকে নজর দেয়। কৌশলেও শরীরও ভোগ করে। তবে কাজ শেষ হলে টাকাও দিতে চায়না। করে প্রতারণা। প্রেমিক নামের পুরুষটিও বছরখানিক আগে আমি গরীব বলে প্রতারণা করেছে। এখনতো অন্য কোন উপায় নেই। তাই যেখানে পারি, সেখানে যাই।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, শুধু ওই দুইজনই নয়, এভাবে বহু নারী অন্ধকার পথের বাসিন্দা এখন। আবার স্বামী প্রবাসী কিংবা ব্যবসার কারণে সময় দিতে হয় বাইরে। এই জাতীয় সুন্দরী নারীরা তাদের কামনা-বাসনা পূরণ করতে অন্যের বিছানায় যাচ্ছে। সুযোগ বুঝে ছবি অথবা ভিডিও করে তা দেখিয়ে পুরুষদের থেকে ফ্ল্যাট বাড়ী অথবা মোটা অংকের টাকাও হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব ঘটনায় বাড়ছে স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ। আর বিচ্ছেদ হলেই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চলে টাকার বিনিময়ে দেহ বাণিজ্য।
No comments:
Post a Comment