আবার কেউ কেউ উন্নত পোশাক এবং বাড়ী-গাড়ীর লোভে পড়েও অন্যের দ্বারা এই পথের বাসিন্দা হয়েছে। কেউ বিলাসিতা আবার কেউ দারিদ্রতার কারণে সামাজিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হয়েছে। এই রকম ঘটনা বেশকিছু রয়েছে বলে দাবি করেন বেসরকারী একটি এনজিও সংস্থা। ওদিকে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য ঘটনা। পিতা-কন্যার পরিচয় দিয়েও ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে মুলত চলছে দেহ বাণিজ্য।
এই রকম অভিযোগ পাওয়া গেছে হালিশহর এইচ ব্লকে। চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মরত এক কর্মকর্তা নিজ কন্যা পরিচয় দিয়ে ওই বাসার ৪র্থতলার একটি ফ্ল্যাট দুই বছর আগে ভাড়া নেন। এরপর কন্যার পরিচয় দিয়ে তিনি ওই ভবনের সকলকে জানান, মেয়েটির মা অসুস্থ্য এবং তিনি অন্যত্র থাকেন। মেয়ের জামাই দেশের বাইওে চাকুরীতে কর্মরত। কলেজ পড়ুয়া মেয়েটির লেখাপড়ার কথা ছিন্তা করে তিনি নিরিবিলি পরিবেশের এই বাসাটি ভাড়া নেন ১৫হাজার টাকায়। কিন্তু দেখা গেছে, ওই কর্মকর্তা প্রায়ই সুন্দরী অল্প বয়সী নারীদের এই বাসায় নিয়ে আসেন। কথিত কন্যা তার কলেজ পড়ুয়া বান্ধবীদের এই বাসায় নিয়ে আসেন এবং পিতা নামধারী লোকটির সাথে পরিচয়ও করিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, ভাল ভাল উপহারও দেন।
একদিকে পিতা, অন্যদিকে কন্যা দুইজনেই বাসায় নিয়ে আসে স্মার্ট নারীদের। তারা কেন আসেন ,কি জন্য আসেন, সবেই মহল্লাবাসী জানে। অন্যদিকে বিউটি পার্লারের মালিকরা সুন্দর করে পার্লার দিয়ে মেয়ে শিকারের কাজে অর্থ বিনিয়োগ করে। এখানে কর্মরত বিউটিশিয়ান কিংবা গ্রাহকদের দিয়ে বাড়তি আয়ের প্রলোভন দিয়ে মালিকরা চালায় দেহ বাণিজ্য। তবে এই বাণিজ্য পার্লারের বাইরে হয় বাসা-বাড়ীতে।
এতে অনেক গৃহবধূ ও স্কুল ছাত্রী পার্লারের মালিক দ্বারা প্রতারিত হয়ে এখন সর্বস্ব হারিয়েছে। অপরদিকে শহরের মিনি চাইনিজ হোটেলগুলোতে এমনভাবে কক্ষগুলো সাজানো রয়েছে। যেখানে এসব কক্ষে চেয়ারে বসেই অনেক দেহ ব্যবসায়ী তার খদ্দেরের চাওয়া পাওয়া পূরণ করছে। তবে এরা বিত্তবানদের সন্তান এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীই বেশি বলে জানান হোটেল মালিকরা। গত বছর বেশকিছু চাইনিজ হোটেলে র্যাব অভিযান চালিয়ে অন্তত ৪৫জন নারী-পুরুষকে আটকও করেন। কিন্তু থেমে নেই নারী বাণিজ্য। এমন ঘটনা বিভিন্ন মহল্লার সমাজসেবকদের জানা থাকলেও প্রভাবশালী মহল জড়িত বিধায় প্রতিবাদ করার সাহস করা হয়না কারো।
বিশ্বস্তসূত্র জানায়,এভাবে শহরের বিভিন্ন স্থানে স্বামী,শ্যালিকা কিংবা শ্যালিকার বান্ধবী পরিচয় দিয়ে চলছে নারী বাণিজ্য। পুলিশ প্রশাসনও এসব ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট থেকে মাসোয়ারা পেয়ে থাকেন বলে এলাকাবাসী এই প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেন। আজ মঙ্গলবার সকালে এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ডীন ডক্টর হাসান মাহমুদ বলেন, প্রত্যেক অভিভাবক তার সন্তানের প্রতি তীক্ষè নজর রাখলে খারাপ পথে তারা পা বাড়াবেনা।
তবে দারিদ্রতার কারণে এই পেশায় নারীরা ঝুঁকে পড়ছে। বেকার জীবনও এর জন্য দায়ী কম নয়। ব্যাপকহারে কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং ধর্মীয় প্রচারণা থাকলে এই পেশায় নারীরা আসতে তেমন আগ্রহী হবেনা । চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের এই প্রসঙ্গে বলেন, যেখানে নারীদের নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ হয়, সেখানের পুলিশ সংবাদ পেলেই অভিযান চালায় । চলতি বছর বেশকিছু দেহ ব্যবসায়ীকে পুলিশ আটক করেছে। মাশরাও হয়েছে। তবে পুলিশ দেহ ব্যবসায়ীদের থেকে কোন টাকা নেয়না। এই ব্যবসা প্রতিরোধ করতে হলে পাড়া-মহল্লার লোকজনকে আরো সচেতন হতে হবে।
No comments:
Post a Comment